১০ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর সহজ ঘরোয়া উপায়

মাত্র ১০ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানো শুরুতে শুনতে কঠিন মনে হলেও, কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করলে তা সম্ভব। এই আর্টিকেলে আপনি জানতে পারবেন কিভাবে খাওয়া-দাওয়ার রুটিন বদল করে ঘরে বসেই হালকা ব্যায়াম করে আর কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলে দ্রুত ওজন কমানো যায়। এই আর্টিকেলে এমন কিছু উপায় দেওয়া হয়েছে যেগুলো খুব সহজে দৈনন্দিন জীবনে মেনে চলা যায় এবং শরীরের কোন প্রকার ক্ষতি না করেই ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে।

১০-দিনে-৫-কেজি-ওজন-কমানোর-সহজ-ঘরোয়া-উপায়
কোন কঠিন ডায়েট বা ব্যয়বহুল জিম ছাড়াই যারা ঘরে বসে ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি একদম উপযোগী। পুরো লেখা পড়লে আপনি নিজের জন্য একটি কার্যকর রুটিন তৈরি করতে পারবেন যা সত্যি কাজে দেবে বলে আমি মনে করি।

সূচিপত্রঃ ১০ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর সহজ ঘরোয়া উপায় 

অনেকেই মনে করেন ওজন কমানো মানেই কঠোর ডায়েট, ব্যায়াম আর নানারকম দামী সাপ্লিমেন্ট। কিন্তু সত্যি কথা হল কিছু সহজ ঘরোয়া নিয়ম মেনে চললেই খুব অল্প সময়ের মধ্যে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন আনা সম্ভব।

বিশেষ করে যারা ব্যস্ততার কারণে জিমে যেতে পারে না বা বড়ো কোন ডায়েট ফলো করা তাদের পক্ষে কঠিন তাদের জন্য এই লেখাটি হতে পারে একটি সহজ সমাধান।

এখানে এমন কিছু ঘরোয়া উপায়, খাবারের পরিকল্পনা ও দৈনন্দিন অভ্যাস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যেগুলো অনুসরণ করলে মাত্র ১০ দিনেই আপনি। ৫কেজি পর্যন্ত ওজন কমাতে পারবেন সেটাও শরীরের কোন প্রকার প্রতি সাধন না করেই।

চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক কোন কোন ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করলে আপনার শরীরকে হালকা ও সুস্থ করে তুলতে পারে এই অল্প সময়ের মধ্যেই। 

ওজন কমাতে যে খাবারগুলো বাদ দেওয়া উচিত

ওজন কমানোর প্রক্রিয়া শুধু ব্যায়াম বা ডায়েট পরিকল্পনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি এটি এক ধরনের সচেতন জীবন যাপন যেখানে খাদ্যাভ্যাস সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে। অনেকেই শুধু কম খাওয়ার মাধ্যমে ওজন কমাতে চান, কিন্তু কি খাচ্ছেন এবং কি বাদ দিচ্ছেন সেটিই মূল চাবিকাঠি। 
এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে, ওজন কমানোর জন্য কোন খাবারগুলো আপনার প্রতিদিনের ডায়েট থেকে বাদ দেওয়া উচিত। এই তথ্যগুলো বিজ্ঞানভিত্তিক ও পুষ্টিবিদের অনুযায়ী সাজানো হয়েছে যেন আপনি সুস্থ ও টেকসই উপায়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। 

ওজন কমাতে যে খাবারগুলো বাদ দিতে হবে

  • ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই চিনি ও চিনি যুক্ত পানীয় বাদ দিতে হবে যেমন কোমল পানীয়, চকলেট, মিষ্টি, জাতের উচ্চমাত্রায় কেনরে থাকে যা সরাসরি ওজন বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে।
  • পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট যেমন সাদা চাল, ময়দা, সাদা পাউরুটি, বেকারির তৈরি করা খাদ্য, এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়িয়ে দেয় এবং ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয়।
  • ফাস্টফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন পিজ্জা, বার্গার, ফ্রেন্ডস ফ্রাই ইত্যাদি। এতে অতিরিক্ত সেচুরেটেড ফ্যাট, লবণ এবং কেমিক্যাল থাকে।
  • প্যাকেট যাত খাদ্যদ্রব্য যেমন চিপস, বিস্কিট, চকবার ইত্যাদি এগুলোতে উচ্চমাত্রায় ট্রান্সফ্যাট  ক্যালোরি থাকে যা শরীরের চর্বি জমতে সাহায্য করে।
  • অতিরিক্ত ভাজা ও তেলে ভাজা খাবার যেমন সমুচা, পুরি, পেঁয়াজু ইত্যাদি এগুলোর শরীরের জন্য ক্ষতিকর চর্বি যোগ করে এবং হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে। 
  • আইসক্রিম ও মিষ্টি জাত খাদ্য দ্রব্য এগুলোতে ক্যালরি বেশি কিন্তু পুষ্টিমান একদম কম ফলে ওজন দ্রুত বাড়ে। 
  • অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার যেমন আচার, প্রসেসকৃত মাংস ইত্যাদি। লবণ শরীরে পানি ধরে রাখে ফলে ওজন ও ফোলা ভাব বাড়ে।
ওজন কমাতে হলে শুধু পরিমাণ নয় বরং খাবারের গুণগত দিক বিবেচনা করাও জরুরী। আপনারা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা থেকে উপরোক্ত খাদ্যগুলো বাদ দিলে ধীরে ধীরে আপনার শরীর নিজেই ভারসাম্য বজায় রাখতে শুরু করবে। এক্ষেত্রে হেলদি প্রোটিন আঁশযুক্ত শাকসবজি ও পর্যাপ্ত পানিগ্রহণ করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

স্মরণে রাখবেন ওজন কমানো মানেই অনাহারে থাকা নয়, সচেতন খাবার নির্বাচনী আপনার সেরা সিদ্ধান্ত।

ডায়েট না করে ক্যালোরি কমানোর উপায়

আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা মনে করেন ক্যালোরি কমাতে হলে কঠিন টাইপ পালন করতে হবে, কিন্তু সত্যি বলতে কিছু সহজ জীবন যাপন ও পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনি ক্যালোরি কমাতে পারেন ডায়েট না করে। নিচে এমন কিছু কার্যকরী উপায় তুলে ধরা হলো যেগুলো আপনি দৈনন্দিন জীবনে সহজেই অনুসরণ করতে পারেন।

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন। খাবারের আগে এক অথবা দুই গ্লাস পানি খেলে পেট ভরে থাকে ফলে কম খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। খাওয়ার সময় ধীরে ধীরে চিবিয়ে খায় আপনি কতটুকু খাচ্ছেন হলে আপনি অপ্রয়োজনে বেশি খাবেন না।
বিভিন্ন মিষ্টি বা প্রসেস খাবারের বদলে ফলমূল বা বাদাম জাতীয় খাদ্য বেঁছে নিন, এতে কম ক্যালোরি থাকলেও পুষ্টিগুণ বেশি থাকে। প্রতিদিন হাঁটার অভ্যাস করুন লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন কিংবা ফোনে কথা বলার সময়ই  হাঁটুন। টিভি বা মোবাইল দেখতে দেখতে খাবেন না এতে অজান্তেই আপনি বেশি খেয়ে ফেলেন যা বুঝতেও পারেন না। 

বাড়িতে খাবার জন্য ছোট থালা ব্যবহার করুন। ছোট থালাতে খাবার কম নিলে মনে হবে আপনি অনেক খেয়েছেন। সকালের নাস্তা বাদ দিবেন না এতে সারাদিন অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। ঘুম ঠিক রাখুন। কম ঘুম ক্যালরি বাড়নের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে এবং ক্ষুধার মাত্রা বাড়ায়।

সাধারণত কিছু অভ্যাস বদলে আপনি ডায়েট না করেও ক্যালরি কমাতে পারেন, শুধু সচেতন হতে হবে। নিজের প্রতিদিনের কার্যক্রম নিয়ে মনে রাখবেন, ছোট পরিবর্তনে বড় ফল আনে। স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের জন্য শুরুটা হোক আজ থেকেই। 

ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

চিয়া সিড এখন অনেকের ফিটনেস ও ডায়েটের একটি অনবদ্য অংশ। এই ছোট ছোট বীজগুলো দেখতে ছোট হলেও এতে আছে প্রচুর ফাইবার, ওমেগা-৩, এসিড প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ওজন কমাতে পারে। তবে ভুল ভাবে খেলে কোন উপকার হয় না উল্টো গ্যাস্ট্রিক বা হজমের সমস্যা হতে পারে তাই খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানা খুব জরুরি।

চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক নিয়ম

  • চিয়া সিড খাওয়ার আগে অন্তত 20 থেকে 30 মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।। এতে করে এটি ফুলে উঠে ও সহজে হজম হয়।
  • সকালে খালি পেটে এক গ্লাস ভিজানো চিয়া সিড পানি খেলে পেট দীর্ঘ সময় ভরা থাকে এবং ক্ষুধা কম লাগে।
  • লেবু ও মধু মিশিয়ে চিয়া সিড পানীয় বানিয়ে পান করলে শরীরের টক্সিন বের হয় এবং ফ্যাট কমে।
  • শরীরের ওজন কমাতে প্রোটিন স্মুদি বা ওটস এর সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারে এতে পুষ্টি ও ফাইবার দুটোই বাড়বে।
  • অতিরিক্ত খেলে গ্যাস ও পেট খাবার সমস্যা হতে পারে তাই প্রতিদিন এক থেকে দুই চামচ চিয়া সিড খান।
  • রাতের খাবার খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে চিয়া সিড খেলে ক্ষুধা কমে ফলে কম খেয়েই পেট ভরে যায়, যার ফলে ওজন বৃদ্ধি কমে।
  • না ভিজিয়ে সিট খাওয়া উচিত নয়, এতে করে এটি পেটে গিয়ে ফুলে উঠতে পারে যা হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। 
চিয়া সিড ওজন কমাতে সহায়ক হলেও এটি কোন ম্যাজিক নয়। সঠিক খাবার, নিয়মিত ঘুম ও হালকা ব্যায়ামের সঙ্গে চিয়া সিড খাওয়া যুক্ত করলে দ্রুত ফল পাওয়া সম্ভব। মনে রাখবেন স্বাস্থ্য সচেতনতা মানে শুধু খাবার নয়, বরং প্রতিদিনের অভ্যাসে সচেতন হওয়া জরুরি।

ওজন কমাতে গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম

ওজন কমাতে গ্রিন টি একটি কার্যকর প্রাকৃতিক পানীয়। এতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট, বিশেষ করে ক্যাটেচিন, শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। এতে ক্যালরি কম কিন্তু ফ্যাট বার্ন করার ক্ষমতা রয়েছে যা নিয়মিত খেলে ধীরে ধীরে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ওজন-কমাতে-গ্রিন-টি-খাওয়ার-নিয়ম
গ্রিন টি খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো সকালে খালি পেটে এক কাপ কুসুম গরম পানিতে গ্রিন টি'র ব্যাগ ভিজিয়ে পান করা। তবে যাদের এসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তারা হালকা না তার পর খেতে পারেন এতে, হজম শক্তি বাড়ে এবং শরীর সারাদিন সতেজ থাকে।

একদিনে দুই থেকে তিন কাপ গ্রিন টি পান করা যেতে পারে দুপুরে বা বিকালে খাবারের ৩০ মিনিট পরে এক কাপ গ্রিন টি ফ্যাট বার্নিং প্রসেসকে ত্বরান্বিত করে। তবে একসাথে অনেক কাপ খাওয়া ঠিক নয় কারণ এতে থাকা ক্যাফেইন অতিরিক্ত হলে ঘুমের সমস্যা হতে পারে।
গ্রিন টি কখনোই চিনি বা দুধ দিয়ে খাওয়া উচিত নয় এতে এর প্রাকৃতিক উপকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। চাইলে এক চামচ লেবুর রস বা এক ফোঁটা মধু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে তবে খুব সামান্য পরিমাণে। রাতের খাবারের পরপর গ্রিন টি না খাওয়াই ভালো। বিশেষ করে যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তাদের এড়িয়ে যাওয়া উচিত। কারণ, এতে ক্যাফেইন থাকাই ঘুম বাধাগ্রস্ত হতে পারে যদি একান্তই খেতেই চান তাহলে রাতের খাবারের অন্তত একঘন্টা পরে খাওয়া ভালো।

সবশেষে, বলা যায় শুধু গ্রিন টি খেয়ে ওজন কমানো সম্ভব নয়। এটি একটি সহায়ক উপাদান হিসেবে কাজ করে। যা সঠিক ডায়েট, হালকা ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত পানি পানির সঙ্গে মিলিয়ে খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। 

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়

বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক নারী ওজন বাড়ার সমস্যায় ভুগছে, যা স্বাস্থ্যর পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসের উপর চরম প্রভাব ফেলতে পারে। তবে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে দ্রুতো ওজন কমানো সম্ভব।  এখানে মেয়েদের জন্য কার্যকর ও বাস্তবসম্মত কিছু উপায় তুলে ধরা হলো প্রতিটি পয়েন্টে রয়েছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও বাস্তব অভ্যাসের প্রতিফলন। 

মেয়েদের ওজন কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস

  • প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ব্যালেন্স ডায়েট অনুসরণ করুন এবং খাদ্য তালিকায় প্রোটিন ফাইবার ও হালকা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার রাখুন ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন বা ইয়োগা ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন, এতে ক্যালোরি বার্ন হয় ও মেটাবলিজম বাড়ে।
  • দিনে অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করার অভ্যাস করুন এতে শরীরের টক্সিন বের হয়ে যায় ও ক্ষুধা কমে।
  • খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন বেশি খাবার খাওয়ার পরিবর্তে দিনে ছোট ছোট ভাগে পাঁচ থেকে ছয়বার খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
  • পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন প্রতিদিন অন্তত সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুম শরীরের হরমোন নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে যা ওজন কমাতে ভূমিকা রাখে।
  • গ্রিন টি ও চিয়া সিড গ্রহণ করুন গ্রিন টি শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায় আর চিয়াসিড দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।
  • প্রসেস ফুড ও কোল্ড্রিংস এড়িয়ে চলুন এগুলো খাবারের অতিরিক্ত চিনিযুক্ত উপাদান থাকে যা ওজন বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
  • মানসিক চাপ কমান, স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তা হরমোন ব্যালেন্সে বিঘ্ন ঘটায় যা ওজন কমাতে বাধা দেয় মেডিটেশন বা নিজের জন্য সময় বের করুন। 
ওজন কমানো একটি ধীর গতির প্রক্রিয়া। মেয়েরা যদি নিয়মিত ও সচেতন ভাবে এই অভ্যাস করন করেন, তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমানো সম্ভব। কোন এক্সট্রিম ডায়েট বা শরীরের ক্ষতি হয় এমন কিছু না করে ধৈর্য ধরে এগুলোই সবচেয়ে ভালো ফল দেয়। সুস্থ শরীর মানেই আত্মবিশ্বাসী জীবন সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলুন।

জিরা পানি কিভাবে খেলে ওজন কমে

জিরা-পানি-কিভাবে-খেলে-ওজন-কমে
শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ে আপনি চিন্তিত এবং শরীরের এই বাড়তি ওজন কমাতে প্রাকৃতিক উপায় খুঁজছেন? জিরা পানি হতে পারে এক কার্যকর সমাধান। এটি শরীরের বিপাক ক্রিয়া বাড়িয়ে হজম শক্তির উন্নতি করে। সহজে ক্যালোরি ঝরাতে সাহায্য করে। শুধু নিয়ম মেনে জিরা পানি খাওয়ার মাধ্যমে ধীরে ধীরে ওজন কমানো সম্ভব। নিচে জিরা পানি খেলে কিভাবে ওজন কমে তার ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলোঃ

  • জিরা পানি বিপাকক্রিয়া বাড়ায়, জিরা পানি খাওয়ার ফলে শরীরে মেটাবলিজম বাড়িয়ে দ্রুত ক্যালোরি বার্ন করতে সাহায্য করে ফলে চর্বি দ্রুত কমে।
  • হজম শক্তির উন্নতি করে জিরা পানিতে থাকা এনজাইম হজমে সহায়তা করে যা খাবার দ্রুত ভেঙে ফেলে এবং পেটের ফোলা ভাব কমায়।
  • জিরা পানি খেলে ক্ষুধার পরিমাণ কিছুটা কমে ফলে কম খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়।
  • জিরা পানি শরীরের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে যা ওজন কমাতে সহায়ক।
  • জিরা পানি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে যা ওজন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 
  • জিরা পানি শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উৎপাদন করে ফলে শরীরে নতুন করে চর্বি জমতে বাধা দেয়।
  • জিরা পানি মূত্র-বর্ধক হিসেবে কাজ করে ফলে শরীরে বাড়তি পানি বের হয়ে যায়।
  • জিরাবানি শরীরকে শক্তি দেয় ফলে ব্যায়াম বা হাঁটাচলা করতে উৎসাহ বাড়ে।
জিরা পানি একটি সহজ সাশ্রয়ী প্রাকৃতিক পদ্ধতি যা নিয়মিত খেলে ধীরে ধীরে ওজন কমানোর পথ সহজ হতে পারে। তবে এক এর সঙ্গে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও হালকা ব্যায়াম থাকলে ফল আরো ভালো এবং তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস জিরা পানি খাওয়ার অভ্যাস শুরু করুন এবং নিজের মধ্যে পরিবর্তন নিজেই দেখতে পাবেন। 

FAQ - ১০ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর সহজ ঘরোয়া উপায় 

১ কোন সময় ব্যায়াম করলে ওজন বেশি কমে?
সকালে খালি পেটে হালকা ব্যায়াম করলে ওজন কমতে বেশি কার্যকর হয়।

২ পানি বেশি খেলে কি ওজন কমে?
হ্যাঁ, পর্যাপ্ত পানি ক্ষুধার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ও বিপাক ক্রিয়া বাড়ায়।

৩ রাতে দেরি করে খেলে কি ওজন বাড়ে?
হ্যাঁ, দেরিতে খাওয়া হজমে সমস্যা করে ও চর্বির জমার প্রবণতা বাড়ায়।

৪ ব্যায়াম ছাড়া কি ওজন কমানো সম্ভব?
সম্ভব, তবে খাবারে ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ ও জীবন যাপনে সচেতনতা জরুরি।

৫ কোন খাবার ওজন কমাতে সাহায্য করে?
চিয়া সিড, সবজি, ফলমূল, লেবু পানি, গ্রিন টি, এই সমস্ত খাবার ওজন কমানোর জন্য উপকারী।

৬ কত দিনে ওজন কমানো নিরাপদ?
প্রতি সপ্তাহে আধা কেজি থেকে এক কেজি ওজন কমানো নিরাপদ ও টেকসই পদ্ধতি। 

উপসংহারঃ ১০ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর সহজ ঘরোয়া উপায় 

১০ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানো শুনতে কঠিন মনে হলেও অসম্ভব নয়, যদি আপনি নিয়ম মেনে ঘরোয়া উপায় যেমনঃ হালকা ব্যায়াম, জিরা বা লেবু পানি, সুষম খাবার গ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান ও ভালো ঘুমের অভ্যাস বজায় রাখেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অতিরিক্ত খাওয়া বন্ধ করা ও মেটাবলিজম সচল রাখা। শরীরকে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করে তুললে দ্রুত ও নিরাপদ ভাবে ওজন কমানো সম্ভব।
সুস্থ জীবনযাত্রার পথে এগিয়ে যান সচেতনতার সঙ্গে। আপনার ওজন কমানোর যাত্রা হোক নিরাপদ ও টেকসই। আশাকরি আজকের এই  আর্টিকেল আপনার কাজে আসবে এই কামনায় আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। এই আর্টিকেল সম্পর্কিত কোন কিছু জানার বা জানানোর থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন বা মন্তব্য করুন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অল অভার বিডি ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।;

comment url