স্বাস্থ্যকর উপায়ে দ্রুত ওজন বৃদ্ধির ১২টি কার্যকরী টিপস
বর্তমান সময়ে আমরা চারিদিকে শুধু ওজন কমানোর বিষয়ে কথা শুনি কিন্তু এসবের মাঝেও এমনো কিছু মানুষ আছেন যারা চান দ্রুতো ওজন বৃদ্ধি করতে,হোক সেটা স্বাস্থ্যগত কারণে বা নিজের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির জন্য।তাহলে চলুন এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা জানবো কি করে স্বাস্থ্যকর উপায়ে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করা যায়।
আমাদের আশেপাশে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা যথেষ্ট পরিমাণে খাবার গ্রহণের পরেও ওজন বৃদ্ধি করতে পারছেন না যার ফলে তারা হতাশায় ভুগছেন কিন্তু এর পেছনে থাকতে পারে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ,তাই এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা বিস্তারিতভাবে জানবো কিভাবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করা যায়।
পেজ সুচিপত্রঃ স্বাস্থ্যকর উপায়ে দ্রুত ওজন বৃদ্ধির ১২টি কার্যকরী টিপস
- স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বৃদ্ধির জন্য নিয়ম মেনে চলা
- শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম না করা
- ইচ্ছেমতো ঔষধ ও সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা
- স্বাস্থ্যকর চর্বি ও প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়া
- কোনো বেলায় খাবার এড়িয়ে যাওয়া ও অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা
- দ্রুত ওজন বৃদ্ধিতে ঘুম ও বিশ্রামের ভূমিকা
- দ্রুত ওজন বৃদ্ধিতে দেশীয় খাবারের অবদান
- ওজোন বৃদ্ধির জন্য উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া
- স্বাস্থ্যকর ভাবে ওজন বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত ঘুমানো
- ফল ও শাকসবজি নির্বাচন যা ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
- ওজন বৃদ্ধির জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা
- ওজন বৃদ্ধিতে মনোবল হারিয়ে ফেলা
- শেষ কথাঃ স্বাস্থ্যকর উপায়ে দ্রুত ওজন বৃদ্ধির ১২টি কার্যকরী টিপস
স্বাস্থ্যকর উপায়ে দ্রুতো ওজন বৃদ্ধির জন্য নিয়ম মেনে চলা
স্বাস্থ্যকর উপায়ে দ্রুত ওজন বৃদ্ধির জন্য অনেকে মনে করে দ্রুত ওজন বৃদ্ধিতে শুধু বেশি
খাবার খেলেই চলে কিন্তু এই ধারণাটি পুরোপুরি ভুল কেননা ওজন বৃদ্ধি বেশি খাওয়ার
মাধ্যমে হয় না বরং সঠিক নিয়ম মেনে চলায় এর জন্য চাবিকাঠি যারা চান দ্রুত ও
স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বাড়াতে তাদের প্রথম কাজ হলো নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের অভ্যাস করে তোলা এবং প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণ
ক্যালরি প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকা জরুরী অতিরিক্ত
ফাস্টফুড বা প্রক্রিয়াজাত খাবার নয় বরং ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া বেশি
উপকারী।
স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বৃদ্ধির জন্য একজন ব্যক্তির সর্বপ্রথম প্রয়োজন
শরীরের চাহিদ খাদ্য পরিকল্পনা করা এর জন্য প্রতিদিনের খাবারে মাছ, মাংস, দুধ
,ডিম, চিনা বাদাম ,ফল ও শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত প্রয়োজন এবং দিনে পাঁচ
থেকে ছয় বার ছোট ছোট মীল খাওয়ার অভ্যাস করা যাতে শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি
পায় পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা দিনে অন্তত সাত থেকে আট গ্লাস এবং
ঘুমের দিকে নজর দেয়া জরুরি। স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য
ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অত্যন্ত দরকারি কারণ হঠাৎ করে খাওয়া-দাওয়া ও অভ্যাসের
পরিবর্তন করলে ওজন বাড়ার পরিবর্তে হজমের সমস্যা হতে পারে।
মনে রাখতে হবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বৃদ্ধির জন্য ধৈর্য ধরে চলা অত্যন্ত জরুরী
আরো মনে রাখতে হবে দ্রুত ফল পেতে গিয়ে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে ওজন বাড়ানো ভবিষ্যৎ
মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে তাই পরিকল্পিত এবং বিজ্ঞানভিত্তিক এবং
নিয়মিত অভ্যাসের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর ভাবে ওজন বৃদ্ধি করায় সবচেয়ে নিরাপদ পথ
বলে আমি মনে করি।এক্ষেত্র তড়াহুড়ো করা উচিৎ হবে না।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে ই-পর্চা ও খতিয়ান অনুসন্ধান
শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম না করা
অনেক মানুষ মনে করে ওজন বাড়ানোর জন্য ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের কোন
প্রয়োজন নাই বরং এটি কিন্তু বাস্তবে এটি একটি বড় ভুল ধারণা ব্যায়াম না করলে
শরীরের বিভিন্ন অংশের ফ্যাট জমে যা একদিকে যেমন অস্বাস্থ্যকর কারণ হয় তেমনি
শরীরের গঠন ও বিশ্রী হয়ে যায় তাই ওজন বৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় আমাদের ব্যায়াম বাদ
দেওয়া উচিত নয় বরং সঠিক ব্যায়াম অন্তর্ভুক্তি করা জরুরী। বিশেষ করে কার্ডিও ও
ওয়েট ট্রেনিং ব্যায়াম শরীরে স্বাস্থ্যকর ভাবে ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে খাবার থেকে পাওয়া অতিরিক্ত ক্যালরি শরীরে শক্তি ও
মাংসপেশি তৈরিতে ব্যবহৃত হয় যা শরীরকে সুগঠিত এবং আকর্ষণীয় করে তুলে।
পাশাপাশি ব্যায়াম করলে হজম ক্ষমতা ও ক্ষুধা বৃদ্ধি পায় এবং ঘুম ও ভালো
হয় যা অতিরিক্ত চর্বি গলাতে সাহায্য,করে তবে অতিরিক্ত কঠিন ব্যায়াম করা
যাবে না বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম
নির্বাচন করা উচিত মনে রাখতে হবে স্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধির জন্য শরীর চর্চা এবং
পুষ্টিকর খাদ্যদ্রব্যর সমন্বয় করা সেরা উপায় এবং এটিই করা উচিত বলে স্বাস্থ্য
বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এবং পরামর্শ দেন এবং আমাদেরও তা সঠিকভাবে মেনে চলা
উচিত বলে আমি মনে করি আশা করি সকলে এটি মেনে চলবেন
ইচ্ছেমতো ঔষধ ও সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা
বর্তমান সময়ে বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির চোখ ধাঁধানো বিজ্ঞাপন দেখে অনেকে দ্রুত
ওজন বৃদ্ধির জন্য তাদের ঔষধ ও সাপ্লিমেন্ট এর ফাঁদে পা দেয়, যা শরীরের জন্য
মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কেননা ওজন বৃদ্ধির জন্য ইচ্ছেমতো ঔষধ গ্রহণ করা মোটেও নিরাপদ নয় অনেকে দ্রুত ফল পাবার আশায় ডাক্তারের
পরামর্শ ছাড়াই বিভিন্ন উপায়ে ট্রেরোয়েড ফ্যাট ডিনার অথবা ওজন বাড়ানোর
ট্যাবলেট বা মেডিসিন খেয়ে থাকেন তবে এতে শরীরের ভেতর নানা ধরনের ক্ষতিকর
প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে যা মোটেও কাম্য নয় ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে ঔষধ
ও সাপ্লিমেন্ট এর ব্যবহারের ডাক্তারি বা বৈজ্ঞানিক কোন বৈধতা নাই।
অপ্রয়োজনে ওজন বৃদ্ধির ঔষধ গ্রহণ করলে লিভার কিডনি হার্ট সহ শরীরের বিশেষ
গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ গুলোতে মারাত্মক প্রভাব পড়ে।বিশেষ করে স্টেরোয়েড জাতীয়
ওষুধগুলো সাময়িক পর্যন্ত বৃদ্ধি করলেও দীর্ঘ মেয়াদে ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ
এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় যা পরবর্তীতে মারাত্মক ব্যাধি আকারে ধরা
দেয়। ওজন বৃদ্ধির জন্য যদি কোন সাপ্লিমেন্ট বা ওষুধ খেতেই হয় তবে সে বিষয়ে
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করাই উচিত কেননা নিরাপদ ও
প্রাকৃতিক উপায়ে ধীরে ধীরে ওজন বাড়ানো স্বাস্থ্যকর মাধ্যম,ইচ্ছামত ঔষধ খেয়ে
লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হতে পারে যা ভবিষ্যতে অনেক বিড়ম্বনার কারণ হয়ে
দাঁড়াতেও পারে তাই আমাদের পূর্বেই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ
স্বাস্থ্যকর চর্বি ও প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়া
স্বাস্থ্যকর উপায়ে দ্রুতো ওজন বৃদ্ধি করতে চাইলে প্রথমে খাদ্যাভ্যাসে আমূল পরিবর্তন
আনতে হবে কেননা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালোরি নিশ্চিত করার পাশাপাশি
পর্যাপ্ত পরিমাণ চর্বি ও প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
তবে মনে রাখতে হবে এই ক্ষেত্রে ফাস্টফুড বা জাঙ্ক ফুড জাতীয় খাবার এবং তৈলাক্ত
খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। প্রাকৃতিক চর্বি ও প্রোটিনের উৎস যেমন ডিম দুধ মাছ মাংস
ঘী ইত্যাদি খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে ও বেশি বেশি খাইতে হবে
এগুলো শরীরের পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখে এবং পেশি গঠনে সহায়তা করে একই সাথে
এগুলো ওজন বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনে শক্তির সরবরাহ করে।
চর্বি ও প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়ার সময় পরিমাণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে
অতিরিক্ত খেলেও যেমন সমস্যা আবার খুব কম খেলেও কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া যায় না
তাই একটি সুষম পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাদ্য গ্রহণ করাই
শ্রেয় এক্ষেত্রে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়,নিচে চর্বি ও প্রটিন যুক্ত খাবারের
তালিকা দেওয়া হলোঃ
প্রোটিনযুক্ত খাবার | চর্বিযুক্ত খাবার |
---|---|
মুরগীর মাংস,গরুর মাংস | সরিষার তেল,সয়াবিন তেল |
স্যালমন,রুই,টুনা,ইলিশ মাছ | চিনা বাদাম,কাজু বাদাম |
হাসের ডিম,মুরগীর ডিম | নারিকেলের তেল,ঘি |
দুধ,দই,পনির | পশুজাত মাখন,পিনাট বাটার |
মসুর ডাল,মুগ ডাল,সয়াবিন | ডিমের কুসুম,মুরগীর চামড়া |
কাজু বাদাম,ছোলা সেদ্ধ | কাজু বাদাম,আখরোট |
ডিমের সাদা অংশ,বাদাম | সামান্য চর্বিযুক্ত গরুর মাংস |
মুরগীর বুকের মাংস | তেলযুক্ত মাছ যেমন স্যালমন |
কোনো বেলায় খাবার এড়িয়ে যাওয়া ও অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা
ওজন বাড়ানো মানেই শুধু বেশি বেশি খাওয়া নয় বরং সময়মতো পরিমিত ও পুষ্টিকর
খাবার খাওয়ায় সবচেয়ে কার্যকর উপায়।যে কোন বেলায় খাবার বাদ ও হঠাৎ অতিরিক্ত
খেলে শরীরে স্বাভাবিক হজমের প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে এছাড়া মানসিকচাপ ও ঘুমের
অভাব ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা ওজন না বাড়ার কারণ হতে পারে তাই ওজন বাড়াতে
চাইলে নিয়মিত খাওয়া দাওয়া হালকা ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম অত্যান্ত প্রয়োজন।
এমনও অনেক সময় হয় যে নিয়মিত খাবার খাওয়ার পরেও শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায় না
অনেক সময় নিয়ম মেনে নিয়মিত খাওয়া দাওয়া করলেও শরীরের দ্রুতো ওজন বৃদ্ধি পায় না যার
পেছনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে যেমন দেহে পুষ্টির অভাব হজমের সমস্যা
অতিরিক্ত মানসিক চাপ ঘুমের ব্যাঘাত ও হাইপার থাইরোয়েড জনিত সমস্যার কারণে হতে
পারে, হরমোন জনিত সমস্যা এছাড়া অনেকেই শরীর চর্চা না করেও ওজন বাড়াতে চান যা
কার্যকর নয় শরীরের পুষ্টির চাহিদা অনুযায়ী খাবার না খাওয়া এবং পানির অভাবেও
ওজন বৃদ্ধিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাই ওজন না বাড়লে সঠিক কারণ নির্ণয় করা এবং
তার প্রতিকার করা অত্যন্ত জরুরী। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে দ্রুতো ওজন বৃদ্ধির জন্য সারা দিনের
খাদ্য তালিকায় নিচে দেওয়া হলঃ
সময় | খাবার |
---|---|
সকাল ৮টা | গরম দুধ+কলা+২টা সেদ্ধ ডিম |
সকাল ১১টা | বাদাম ও খেজুর |
দুপুর ১টা | ভাত+মাংস/ডিম+ডাল+সবজি |
বিকাল ৫টা | ফলের জুস+ বিস্কুট |
রাত ৮টা | রুটি+মাছ/ডিম+সবজি |
ঘুমানোর আগে | এক গ্লাস গরম দুধ |
দ্রুত ওজন বৃদ্ধিতে ঘুম ও বিশ্রামের ভূমিকা
ঘুম ও বিশ্রাম মানুষের ওজন বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যা অনেকেই আবার
অবহেলা করে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় যার ফলে
ক্ষুধা কমে যায় ও বিপাকক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন আসে যা ওজন বৃদ্ধির পথে বাধা
সৃষ্টি করে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ এর প্রতিদিন অন্তত ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমানো
প্রয়োজন রাতে দেরিতে ঘুমানো বা বারবার ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া শরীরের প্রক্রিয়াকে
বাধা গ্রস্থ করে। ক্লান্ত দেহ থেকে এবং সঠিক প্রোটিন ও ক্যালোরি গ্রহণের পরেও ওজন
বাড়ে না তাই দ্রুত ওজন বাড়াতে চাইলে ঘুম ও বিশ্রামের কোন বিকল্প নাই এর জন্য
আপনাকে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলতে হবে।
ঘুমের সময় আমাদের শরীর পুনরায় শক্তি সঞ্চার করে এবং বেশির মেরামত করে যা
টিস্যুর গঠন ওজন বৃদ্ধির একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া ঘুমের সময় গ্রোথ হরমোন
নিঃসৃত হয় যা শরীরের গঠন ও বেশি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে যদি ঘুম ঠিকমতো না হয় তবে
এই হরমোন নিঃসৃত ব্যাহত হয় তাহলে ওজন বাড়ানো কঠিন হয়ে পড়ে আবার সঠিক ঘুম
দেহে ট্রেস হরমোন কর্টিসল এর পরিমাণ কমিয়ে ক্ষুধা ও হজম ক্ষমতা স্বাভাবিক রাখে
রাতে খাওয়ার পর বিশ্রাম ছাড়া ঘুম না হলে এই খাবার থেকে শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি
গ্রহণ করতে পারে না এজন্য নিয়মিত ঘুম ও মানসিক প্রশান্তি দ্রুত ওজন বাড়াতে
সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ
কোটি টাকা আয় করার সেরা ১৪টি উপায়
দ্রুত ওজন বৃদ্ধিতে দেশীয় খাবারের অবদান
আমাদের দেশীয় খাবার গুলো ওজন বাড়ানোর জন্য খুবই কার্যকর কারণ এগুলো সহজলভ্য ও
পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং এগুলো প্রাকৃতিক যেমন ভাত,ডাল,আলু,ডিম,কলা,দুধ,ছোলা ইত্যাদি
খাবারের রয়েছে যুক্ত প্রোটিন ও শর্করা যা দেহে শক্তির যোগান দেয় এবং ওজন
বৃদ্ধিতে সহায়তা করে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে এসব খাবার খেলে শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি
গ্রহণ করতে পারে যা দেহের গঠন ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে দেশীয় ঘি বা সরিষার তেল
দিয়ে রান্না করা খাবারের স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে যা বেশি ও মেদ গঠনে ভূমিকা রাখে
রাসায়নিক নেই যার ফলে দীর্ঘ মেয়াদে স্বাস্থ্যঝুঁকি কমায়।
আমাদের দেশে স্থানীয়ভাবে পাওয়া খাবারগুলো যেমন সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য হয় দেশীয়
খাদ্য পরিকল্পনা বাংলাদেশের ঘরে তৈরি দেশীয় খাবার দিয়ে সহজে একটি
স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য তালিকা গঠন করা সম্ভব যা ওজন বাড়াতে সহায়তা করে যেমন
সকালের নাস্তায় কলা দুধ সেদ্ধ ডিম রাখা দুপুরে ভাত মাংস ডাল ও সবজি
রাখা বিকালে চিড়া মুড়ি বা খেজুর আর রাতে রুটি ডিম ও সবজি এসব খাবার
পুষ্টিকর এবং খরচও কম এসব খাবারের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট ও
প্রোটিন এবং মিনারেল যা ওজন বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত জরুরি বিদেশি বা দেশি প্রোটিন
সাপ্লিমেন্ট এর পরিবর্তে আমরা দেশীয় খাবারের মাধ্যমে ওজন বাড়ানোর দীর্ঘ মেয়াদে
আরো নিরাপদ ও টেকস হয় পাশাপাশি এগুলো প্রতিদিনের রুটিন মেনে খাওয়া
সহজ।
ওজোন বৃদ্ধির জন্য উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া
স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বৃদ্ধি করতে চাইলে সর্ব প্রথমে আপনাকে প্রতিদিনের খাদ্য
তালিকায় নজর দিতে হবে এবং প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার
অন্তর্ভুক্ত করতে হবে অনেকেই মনে করেন ওজন বাড়ানোর জন্য ভাজাপোড়া বা অতিরিক্ত
তৈলাক্ত খাবার খেলে সহজেই স্বাস্থ্য বৃদ্ধি পাবে যা একটি ভুল ধারণা এবং
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এগুলো বাদ দিয়ে এমন কিছু খাবার বেছে নিতে
হবে যেগুলো পুত্র ক্যালোরি সমৃদ্ধ হলেও পুষ্টিতে ভরপুর উদাহরণস্বরূপভাবে বলা যায়
বাদাম চিনা বাদাম কাজুবাদাম কাঠবাদাম সূর্যমুখীর বীজ ইত্যাদি স্বাস্থ্যকর চর্বি
এবং প্রোটিনের ভরপুর ওজন বাড়াতে সহায়তা করে।
ফলের দিকে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত ফল যেমন কলা আর খেজুর অভোকাডো ইত্যাদি প্রতিদিনের
খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত এগুলো থেকে বল ক্যালরি নয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ ভরপুর
থাকে যা শরীর সুস্থ রাখে পাশাপাশি দুধ দই পনির ঘি ইত্যাদি দুগ্ধজাত খাবারও
ক্যালরি সরবরাহ করে এবং পেশি গঠনে সহায়কতা করে, এছাড়া ওট স সুজি আলু মিষ্টি আলু
ব্রাউন রাইস ইত্যাদি জটিল কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়ার মাধ্যমে দীর্ঘ
সময় ধরে শক্তি পাওয়া যায় এবং শরীর দ্রুত ওজন বাড়াতে সহায়তা করে
স্বাস্থ্যকর উপায়ে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে চাইলে অবশ্যই খাবারের প্রতি মনোযোগী হতে হবে
এবং প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় পর পর পাঁচ থেকে ছয় বার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা
উচিত তিন বেলা প্রধান খাবারের পাশাপাশি সকালের জলখাবার বিকালের নাস্তা এবং রাতের
আগে হালকা খাবার রাখা প্রয়োজন প্রতিবার খাবারের প্রোটিন চর্বি ও কার্বোহাইড্রেট
এর মত খনিজ পদার্থের সঠিক সমন্বয় থাকা উচিত এভাবে স্বাস্থ্যকরও সুষম খাদ্য
গ্রহণের মাধ্যমে ধীরে ধীরে ওজন বাড়ে এবং শরীর শক্তিশালী হয়।
তবে এক্ষেত্রে মনে রাখা জরুরী কেবল উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খেলেই হবে না তার
সঙ্গে ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটিস যেমন ব্যায়াম হাটাহাটি ভারোত্তলন যোগব্যায়াম
ইত্যাদি ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটিস করতে হবে প্রতিদিন হাঁটাহাঁটি করলে খাবারের
ক্যালরির সঠিকভাবে কাজে লাগে এবং তা চর্বি আকারে জমে না গিয়ে পেশিতে পরিণত
হয়।তাই পুষ্টিকর ও ক্যালরিযুক্ত খাবারের সঠিক রুটিন ও ব্যালেন্স বজায় রাখা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তবে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে।
স্বাস্থ্যকর ভাবে ওজন বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত ঘুমানো
অনেকেই আছেন যারা স্বাস্থ্যসম্মতভাবে শরীরের ওজন তো বৃদ্ধি করতে চান কিন্তু ঘুমের
দিকে বিশেষ নজর দেন না কিন্তু স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ওজন বৃদ্ধি করতে ঘুম একটি
অত্যাবশ্য করনীয় একটি কাজ একজন মানুষ কে সুস্থ স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপনের জন্য
দিনে অন্তত ছয় থেকে সাত ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন কেননা ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে
খাবারের পাশাপাশি ঘুম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ঘুম আমাদের শরীরের কোষ
পুনর্গঠন নিঃসরণ ও পেশির বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয় অনেকেই না জেনে রাতে
দেরিতে ঘুমান বা ঘুমের সময় ব্যস্ত থাকেন মোবাইল বা টিভিতে যার শরীরের জন্য
ক্ষতিকর ওজন বৃদ্ধির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
অনেকেই আছেন যারা সঠিক নিয়মে এবং সঠিক সময় ঘুমান না যার ফলে ঘুমের অভাবজনিত
কারণে কোটি ছল নামক একটি স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যায় যা শরীরের বিপাকক্রিয়াকে
বাধাগ্রস্ত করে যার ফলে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি সঠিকভাবে গ্রহণ করতে পারেনা
এবং ওজন বাড়ার বদলে উল্টো কমে যেতে থাকে অপরদিকে পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে বিশ্রাম
দেয় হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখে এবং প্রতিটি কোষ কে কার্যকর ভাবে পুষ্টি গ্রহণে
সহায়তা করে ফলে খাবার যতই খাওয়া হোক না কেন ঠিকভাবে ঘুম না হলে শরীর তা ঠিকভাবে
কাজে লাগাতে পারে না।
শুধু ঘুমের সময় ঘুম নয় তার সাথে ঘুমের গুণগত মান গুরুত্বপূর্ণ কেননা ঘুম যেন
যখন গভীর ও নিরবিচ্ছিন্নভাবে হয় তা নিশ্চিত করতে হবে ঘুমানোর আগে ক্যাফেইন
জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলা যেমন চা পান করা বা কফি পান করা মোবাইল বা টিভি পর্দা
থেকে দূরে থাকা হালকা আলো ও শান্ত পরিবেশে ঘুমানো এই ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন
করে ঘুমের আগে হালকা গরম দুধ বা হারবাল চা খেলে মানসিক প্রশান্তি আসে এবং ঘুম
ভালো হয়।
ঘুমের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো শরীরের হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক রাখা হরমোন
গঠনে ঘুমের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ করে গ্রোথ হরমোন এবং টেস্টোস্টেরনের
নিঃসরণ রাতে গভীর ঘুমের সময় সহায়ক হয়ে থাকে যা পেশি গঠনে সহায়ক এবং ওজন
বৃদ্ধির পথে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে তাই যারা ব্যায়াম করে ওজন বাড়াতে যান তাদের
জন্য ঘুম একটি অপরিহার্য কাজ। পর্যাপ্ত ঘুম শরীর ও মনের ক্লান্তি কমায় মনকে সতেজ
রাখে এবং দ্বীনের কাজের জন্য শক্তি সঞ্চয় করে ঘুম না হলে মনোযোগ হ্রাস পায়
খাওয়ার ইচ্ছে কমে যায় এমনকি হজমের সমস্যা দেখা দেয় তাই যারা ওজন বাড়ানোর জন্য
চিন্তা করছেন তাদের জন্য ঘুম একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ফল ও শাকসবজি নির্বাচন যা ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
অনেকেই আছেন যারা ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে ফল ও শাকসবজিকে একেবারেই গুরুত্ব দেন না
কারণ এগুলোর ক্যালরি তুলনামূলকভাবে কম কিন্তু এটা মোটেও ঠিক না কিছু কিছু
নির্দিষ্ট ফল ও শাকসবজিতে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ যেগুলো ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক এবং
একই সঙ্গে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন মিনারেল ও ফাইবার সরবরাহ করে যা ওজন
বাড়াতে চাইলে এমন ফল বেছে নিতে হবে যেগুলো প্রাকৃতিক চিনি স্বাস্থ্যকর চর্বি ও
বেশি ক্যালরি রয়েছে যেমন কলা আম খেজুর নারিকেল অ্যাভোকাডো এগুলোর মধ্যে অনেক
বেশি ক্যালরিও পুষ্টি উপাদান থাকে যা ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
কলার মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক চিনি এবং কার্বোহাইড্রেট শরীরের শক্তির যোগান দেয় এর
জন্য প্রতিদিন একটি অথবা দুইটি কলা খেলে ধীরে ধীরে ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
এছাড়া আম ও খেজুর উচ্চ কেনরযুক্ত উপাদান রয়েছে যেগুলো সহজে হজম হয় এবং
স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী খেজুরে থাকা ফাইবার ও প্রাকৃতিক চিনির কারণে এটি দ্রুত
শক্তি দেয় এবং ক্ষুধা বাড়ায় নারিকেল ও অ্যাভোকাডোতে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি
শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালোরি যোগ করে এবং চর্বি জমার পরিবর্তে তা বেশি ও ত্বক এ
পুষ্টি সরবরাহ করে।
অনেক শাক সবজির মধ্যে এমন অনেক শাকসবজি আছে যেগুলো একটু বেশি ক্যালরি ও
কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে সেগুলো ওজন বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে যেমন মিষ্টি আলু আলু
চাল কুমড়া করলা মুগডাল পালং শাক ইত্যাদি এগুলো রান্না করে নিয়মিত খেলে শরীরে
শক্তি বাড়ে এবং ধীরে ধীরে ওজন ও বাড়ে বিশেষ করে আলু ও মিষ্টি আলুতে থাকা জটিল
কার্বোহাইড্রেট অনেকক্ষণ দেহের শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে ফলে অতিরিক্ত খাওয়া
প্রয়োজন হয় না এবং শরীরে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
সবজি ও ফল খাবার সময় রান্নার পদ্ধতির দিকেও খেয়াল রাখতে হবে এক্ষেত্রে অতিরিক্ত
তেল ও মসলার ব্যবহার না করে সেদ্ধ বা হালকাভাবে রান্না করা হলে সেগুলো পুষ্টি ধরে
রাখে এবং হজমে সহায়ক হয় এমনকি শাকসবজিতে তৈরি স্মুতি বা ফলের কিছু বাদাম দই ওটস
মিশিয়ে নিলে তা একইসঙ্গে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত এবং পুষ্টিকর খাবারে পরিণত হয়। তাই
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তত তিন থেকে চার রকম ফল এবং দুই থেকে তিন রকম
শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করা ফল সকাল ও বিকালে খাওয়া ভালো এবং সবজি রাখা উচিত দুপুর
ও রাতের প্রধান খাবারে। বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি ও ফলমূল খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং সার্বিকভাবে স্বাস্থ্য ভালো রাখে ফলে ওজন বাড়ার পাশাপাশি
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং স্বাস্থ্যকর উপায়ে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুনঃ
বাংলায় আর্টিকেল লেখার নিয়ম
ওজন বৃদ্ধির জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা
এখনো অনেক মানুষের ধারণা যে ওজন বাড়ানোর জন্য শুধু বেশি বেশি খাবার খাওয়াই
যথেষ্ট যা সঠিক নয় বরং ওজন বাড়ানোর জন্য বেশি খাওয়াই যথেষ্ট নয় তার সাথে
দরকার স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা অনিয়মিত অপরিকল্পিত ও অতিরিক্ত
ফাস্টফুড নির্ভর খাবার গ্রহণ শরীরের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করতে পারে এবং ওজন বাড়লেও
তা অস্বাস্যকর ভাবে বাড়ে তাই যারা ওজন বাড়াতে চান তাদের উচিত প্রতিদিন
নির্দিষ্ট সময়ে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা দিনের শুরু হোক
পুষ্টিকর নাস্তা দিয়ে যেমন ডিম ওটস দুধ কলা ইত্যাদি নিয়মিত তিন বেলা প্রধান
খাবারের পাশাপাশি দুই থেকে তিনটি হালকা নাস্তার ব্যবস্থা রাখতে হবে এতে করে
খাবারের প্রোটিন স্বাস্থ করতে পারবে এবং জটিল কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি পূরণ হবে।
দুপুরের খাবারে ভাতের সঙ্গে মাছ বা মাংস ডাল বা সবজি খাওয়া যেতে পারে বিকেলে
সামান্য বাদাম ফল অথবা কলা ইত্যাদি পুষ্টিকর ও কার্যকর উপায়ে খাবার খাওয়া যেতে
পারে রাতের খাবারেও পুষ্টি ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন খাবারের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে
মাঝে মাঝে খাবারে বৈচিত্র আনা প্রয়োজন একই ধরনের খাবার বারবার খেলে সে খাবার
খাওয়ার প্রতি আগ্রহ কমে যায় তাই সকলের উচিত মাঝেমধ্যে নতুন নতুন রেসিপি ট্রাই
করা যেমন ঘরে তৈরি প্রোটিন বলের মত স্ন্যাকস যা ঘরে তৈরি খাবার খাওয়ার
অভ্যাস গড়ে ওঠে ও শরীর ভালো থাকে।
প্রতিদিন নিয়ম করে ও পরিমিত পরিমাণে পানি পান করা একটি স্বাস্থ্যকর ভালো অভ্যাস
আমাদের সকলের উচিত খাওয়ার আগে বেশি পানি না খাওয়া কারণ এতে ক্ষুধা কমে যায়
খাবারের আগে সামান্য ফল বা খুব খাওয়া যেতে পারে যাতে হজম শক্তি বাড়ে প্রতিদিনের
খাদ্য তালিকায় আয়রন জিংক ভিটামিন বি ১২ এবং ওমেগা ৩ এসিডের উৎস থাকা উচিত কারণ
এরা শরীরের কোষ গঠনে সাহায্য করে এবং বেশি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ওজন বৃদ্ধির
লক্ষ্যে কেউ যদি শুধু খাবারের প্রতি জোর দেন তবে সেটা টেকসই হবে না এর জন্য
প্রয়োজন নিয়মিত রুটিন অনুযায়ী ঘুম মানসিক প্রশান্তি এবং সময়মতো পুষ্টিকর
খাবার গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তোলা এ অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে দীর্ঘস্থায়ী এবং স্বাস্থ্যকর উপায়ে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করা সম্ভব এবং শরীর সুস্থ ও সক্রিয় রাখতে এটি
ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
ওজন বৃদ্ধিতে মনোবল হারিয়ে ফেলা
এমন অনেক মানুষই আছেন যারা দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে গিয়ে অনেকেই মাঝপথে হতাশ হয়ে
পড়ে এবং মনোবল হারিয়ে ফেলে কারন ওজন বাড়ানো ঠিক ওজন কমানোর মতই সময় সাপেক্ষ ও
ধৈর্যের বিষয় অনেকের মনেই এই ভুল ধারণা বিরাজ করে যে কয়েক সপ্তাহ বেশি বেশি
খেলে ওজন বেড়ে যাবে কিন্তু বাস্তবে শরীরের বিপাকক্রিয়া হরমোন ঘুম ও মানসিক
অবস্থা সবকিছুই এর সঙ্গে নিয়মিত শত চেষ্টা করতেও কাঙ্ক্ষিত ওজন না এলে অনেকের
মধ্যে হতাশা কাজ করে আর এই হতাশায় ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাসে ব্যাঘাত ঘটায় এবং
চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা শক্তি কমে যায়। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া বা
আশেপাশের মানুষদের চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে অনেকে নিজের অনুমতি নিয়ে সন্দিহান হয়ে
পড়েন এবং মনে করেন তারা ভুল করছে কিনা যা তাদের হতাশায় নিমজ্জিত করে।
প্রত্যেকটা মানুষের শারীরিক গঠন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মেটাবলিজম ক্ষমতা ভিন্ন হয়ে
থাকে কেউ হয়তো সহজে ওজন বাড়াতে পারে আবার কারো ক্ষেত্রে তা কঠিন হয় এই
বাস্তবতা না বুঝে আত্ম সমালোচনার মধ্যে পড়ে অনেকেই মানসিক চাপ তৈরি করে ফেলে এবং
হতাশায় নিমজ্জিত হয় একই সাথে খাবারে আগ্রহ কমে যায়। আবার অনেকেই ওজন বাড়াতে
গিয়ে এমন সব খাদ্যাভাসে অভ্যস্ত হয়ে যান যেগুলো শরীরের জন্য উপযুক্ত নয় ফলে
গ্যাস্ট্রিক ক্লান্তি হজমে সমস্যা দেখা দেয় যখন দেখে এত কিছু করে ওজন বাড়ছে না
তখন মনে হয় সব প্রচেষ্টাই বৃথা ওজন বাড়ানোর একজনকে ব্যর্থ করে তোলে।
ওজন বাড়ানোর এই সময়ে মানসিক ভাবে অনেক শক্ত থাকতে হবে,এই সময়ে অন্য কারো
কথায় কান দেয়া যাবে না।শারীরিক সুস্থ্যতা অর্জনের জন্য একটি লক্ষ্য নির্ধারন করতে
হবে এবং সেই অনুযায়ী আগাতে হবে তবেই সেটি ধাপে ধাপে ফল দিবে।প্রতিদিন ছোট ছোট
পরিবর্তন,সঠিক পরিকল্পনা এবং দৃঢ় মানসিকতা ধরে রাখলে ধীরে ধীরে উন্নতি চোখে
পড়বে,কিন্তু যারা নিজেদের অন্যদের সাথে নিজেদের তুলনা করে,তারা নিজেদের অগ্রগতি
বুঝতে ব্যার্থ হয় এনং অল্পতেই হতাশ হয়ে পড়ে। এর জন্য মনোবল ধরে রাখতে একজনের উচিৎ
দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকা,নিজের শারীরিক অবস্থান বুঝা এবং প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের পরামর্শ
নেওয়া।
শেষ কথাঃ স্বাস্থ্যকর উপায়ে দ্রুত ওজন বৃদ্ধির ১২টি কার্যকরী টিপস
ওজন বাড়ানোর পথ সহজ নয় আবার খুব কঠিন বা অসম্ভব ও নয়,সঠিক দিকনির্দেশনা এবং
স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন নিয়ন্ত্রিত খাওয়া আর পরিমিত ঘুম সবকিছু পরিকল্পনা
মাফিক চললে এই যাত্রা অনেক সহজ হয়ে যায় তবে দ্রুতো ওজন বৃদ্ধির চেষ্টায় অনেকে ভুল
পথে পা বাড়ায় যেমন অতিরিক্ত খাবার,অনিয়মিত জীবন যাপন অথবা এক্সারসাইজ বাদ
দেওয়া এগুলা আস্তে ধীরে হতাশার দিকে নিমোজ্জিত করে। অথচ ধাপে ধাপে পরিকল্পিতভাবে
ওজন বাড়ানোই দীর্ঘস্থায়ী এবং স্বাস্থ্যসম্মত প্রক্রিয়া এই প্রক্রিয়ায় খাদ্য
তালিকা ঘুম মানসিক অবস্থা এবং ফিজিক্যাল একটিভিটি সবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করে।
সর্বোপরি স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বৃদ্ধি করা মানে হল শরীর ও মনের মধ্যে ভারসাম্য আনা
এটি কোন তাড়াহুড়োর বিষয় নয় বরং ধৈর্য্য ও সচেতনতায় পূর্ণ একটি যাত্রা।সেই
যাত্রায় মনোবলই আপনার সবচেয়ে বড় সঙ্গী এবং এই সঙ্গীকে হারানো মানে মাঝ পথে
থেমে যাওয়া,যায় আপনি নিশ্চয়ই চান না।
এই আর্টিকেল সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসা থাকলে বা কোন তথ্য জানানোর থাকলে যোগাযোগ
করুন অথবা মন্তব্য করুন।আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে
ভুলবেন না।
অল অভার বিডি ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।;
comment url