২০২৫ সালের কোরবানির ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানুন এখনই
কোরবানির ঈদ মুসলিমদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব। প্রতিবছর এই দিনটি মুসলিমরা
মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করে থাকেন। অনেকেই আছেন যারা আগেভাগে
জানতে চজারা,২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ কবে হবে, যাতে প্রস্তুতি নিতে সহজ হয়। ঈদের
তারিখ সাধারণত চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে।
তবে সম্ভাব্য তারিখ জানা থাকলে কোরবানির পশু যাতায়াত ও অন্যান্য পরিকল্পনা আগে
থেকেই করা যায়। এই পোস্টে আমরা ২০২৫ সালের কোরবানির ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ও
প্রাসঙ্গিক তথ্য সহজ ভাবে তুলে ধরছি। আসুন, জেনে নিই ঈদের এই খুশির দিনের
সম্ভাব্য তারিখ।
পেজ সুচিপত্রঃ ২০২৫ সালের কোরবানির ঈদের সম্ভাব্য তারিখ
২০২৫ সালে কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ
কোরবানির ঈদ মুসলমানদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এই দিনে মুসলিমরা
আল্লাহর নির্দেশ মেনে পশু কোরবানি করে থাকেন। ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী
কোরবানির ঈদ অর্থাৎ ঈদুল আযহা বা বকরি ঈদ পালিত হয় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে তবে
ইসলামিক মাসগুলো চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে শুরু হয়। তাই প্রতিবছর ঈদের তারিখ
পরিবর্তিত হয়। ২০২৫ সালে সৌদি আরবের হিসাব অনুযায়ী জিলহজ মাস শুরু হতে পারে ২৮
জুনের দিকে সেই হিসেবে ২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ হতে পারে ৭ জুলাই (সোমবার)
তবে বাংলাদেশে চাঁদ দেখা একদিন পরে হতে পারে সে ক্ষেত্রে
৮ জুলাই (মঙ্গলবার)
ঈদ উদযাপিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই তারিখগুলো এখনো সম্ভাব্য হিসেবে ধরা হচ্ছে। কারণ চূড়ান্ত তারিখ নির্ভর করবে
চাঁদ দেখার উপর তাই ঈদের নির্ভরযোগ্য তারিখ দিন জানতে চোখ রাখুন জাতীয় চাঁদ দেখা
কমিটির ঘোষণার উপরে। এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে থাকুন ঈদের জন্য, যাতে আনন্দটা
পূর্ণতা পায়। কোরবানির পশু নির্বাচন, পরিচর্যা ও কোরবানির নিয়ম জেনে রাখা খুবই
গুরুত্বপূর্ণ।
ঈদুল আযহার তারিখ ও চাঁদ দেখা পরিস্থিতি
ঈদুল আযহা বা বকরি ঈদ মুসলিম উম্মার জন্য একটি পবিত্র ও মহামান্বিত উৎসব। এই
দিনটি হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর মহান ত্যাগ ও ইসলামিক হিজরী ক্যালেন্ডার অনুযায়ী
ঈদুল আযহা পালিত হয় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে তবে এই হিজরী মাসগুলো নির্ধারিত হয়
চাঁদ দেখার মাধ্যমে। তাই প্রতিবছর ঈদের দিন ভিন্ন হয় অনেকে আগে থেকেই জানতে চান
ঈদ কবে হবে। কারণ কোরবানি,ভ্রমণ,ছুটি ও আত্মীয়দের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য
পরিকল্পনা করতে হয়। তাই ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানা থাকলে প্রস্তুতি নেয়া সহজ
হয়। যদিও বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞান দিয়ে সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়
কিন্তু ইসলামে চাঁদ দেখা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঈদের দিন ঘোষণা করা হয় না।
ইসলামের মাসের শুরু ও বিশেষ দিন যেমন ঈদ নির্ধারণের জন্য চাঁদ দেখাকে একটি
গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। হাদিসের স্পষ্ট বলা হয়েছে চাদ দেখেই রমজান ও ঈদ
শুরু করতে হবে। তাই ঈদুল আযহার তারিখ নির্ধারণে চাঁদ দেখার কমিটি খুবই
গুরুত্বপূর্ণ সাধারণত প্রতিবছর সরকার নির্ধারিত একটি "জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি"
গঠন করে যারা দেশ জুড়ে চাঁদ দেখার প্রতিবেদন সংগ্রহ করে। যদি কোথাও চাঁদ দেখা
যায় তবে এটি সেই অনুযায়ীদের তারিখ ঘোষণা করা হয়। এটি একটি সুন্দর ও ধর্মীয়
প্রক্রিয়া যা আমাদের ইসলামিক ঐতিহ্যকে ধরে রাখে এভাবে চাঁদ দেখা শুধু ধর্মীয়
বিধানই নয় বরং আমাদের সংস্কৃতির একটি অংশ হয়ে উঠেছে।
কোরবানির ঈদের পূর্ব প্রস্তুতি
কোরবানির ঈদ সবচেয়ে বড় প্রস্তুতি হল উপযুক্ত পশু কেনা। ইসলামের আইন অনুযায়ী
পশু হতে হবে সুস্থ নির্দিষ্ট বয়সের এবং ত্রুটিমুক্ত। অনেকেই ঈদের কয়েকদিন আগেই
পশু কিনে বাড়িতে আনেন তারপর লালন পালন করেন। এতে করে পশুর প্রতি এক ধরনের মায়া
জন্মায় এবং পরিচর্যাও ভালোভাবে করা যায়। পশুর খাবার পানি ও পরিচ্ছন্নতার দিকে
খেয়াল রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোরবানির পশুর যত্ন আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে
করা হয় তাই শুরু থেকেই পশুটিকে ভালোভাবে যত্ন নেওয়া উচিত।
কোরবানির জন্য পশু কেনার পর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল দক্ষ কসাই ঠিক করা ঈদের
সময় কোথায় পাওয়া কঠিন হয়। তাই আগেভাগেই কাউকে ঠিক করে রাখা ভালো পাশাপাশি
কোরবানির জন্য একটি পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত স্থান নির্ধারণ করতে হবে। যদি কেউ
নিজে কোরবানি করে তবে ইসলামের নিয়ম ও দোয়া জেনে রাখা দরকার। কোরবানির জায়গায়
অন্যের অসুবিধা যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে অনেকেই বাসার ছাদে
গ্যারেজে কোরবানি করেন। স্থানটি ভালোভাবে করে পরিষ্কার রাখা উচিত যাতে
কাজটি সুন্দরভাবে সম্পাদন করা যায়।
কোরবানির ঈদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে কোরবানির মাংস ভাগ করা। ইসলামিক আইন
মতে কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করা হয়। এক ভাগ নিজের রাখা, একভাগ
আত্মীয়-স্বজনকে এবং আরেকভাগ গরীব দুঃখীদের মাঝে বিলি করতে হয়। তাই ঈদের আগেই
মাংস রাখার ব্যাগ বরফ সংরক্ষণ বক্স বা ফ্রিজ প্রস্তুত রাখা দরকার। অনেকেই আগে
থেকেই কার কার মাঝে মাংস দেবেন তার তালিকা তৈরি করে রাখেন, এতে করে বিভ্রান্তি কম
হয় এবং দ্রুত মাংস বিতরণ করা যায়। মাংস কাটা ও পরিষ্কার করতেও লোকের দরকার
হতে পারে তাই সে ব্যবস্থা রাখা। ভালো প্রস্তুতি ভালো হলে ঈদের দিনটা আরো
আনন্দদায়ক ও স্বস্থির হয়।
বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ উদযাপন কবে হবে
২০২৫ সালে, সৌদি আরবের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জিলহজ মাস শুরু হতে পারে
২৮জুন সেই হিসেবে সেখানে ঈদুল আযহা উদযাপিত হতে পারে
৭ জুলাই সোমবার কিন্তু বাংলাদেশের সাধারণত সৌদি আরবের একদিন পর চাঁদ দেখা
যায় হলে এখানে জিলহজ মাস শুরু হতে পারে ২৯ জুন এবং সেই অনুযায়ী
৮ জুলাই মঙ্গলবার কোরবানির ঈদ উদযাপিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সরকার
কর্তৃক গঠিত জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি সারা দেশ থেকে তথ্য নিয়ে সঠিক দিন
ঘোষণা করে তাই চূড়ান্ত তথ্য জানতে হলে সেই ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
সারসংক্ষেপে বলা যায়, ২০২৫ সালে বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ হবার সম্ভাব্য তারিখ হল
৮ জুলাই মঙ্গলবার
তবে এই তারিখ চূড়ান্ত হবে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির ঘোষণার মাধ্যমে।
উপসংহারঃ ২০২৫ সালে কোরবানির ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানুন
২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ হবে তা জানতে অনেকেই আগ্রহী। যদিও চূড়ান্ত তারিখ চাঁদ
দেখার উপর নির্ভর করে। তবে সম্ভাব্য তারিখ অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে পারি।
ঈদের আনন্দ জেনো সঠিকভাবে সবাই উপভোগ করতে পারে তাই আগে থেকেই পরিকল্পনা করায়
বুদ্ধিমানের কাজ। ইসলামী নিয়ম মেনে ঈদ উদযাপন করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত
হয়, তাই চাঁদ দেখা কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী ঈদ উদযাপন করায় উচিত। আমরা যেন এই
পবিত্র দিন সঠিকভাবে কোরবানি করতে পারি এবং গরিব-দুঃখীদের পাশে দাঁড়াতে পারি
এটাই আমাদের কাম্য। ঈদের আনন্দ হোক সবার জন্য পরিপূর্ণতা লাভের দিন।
এই আর্টিকেলটি পরে যদি আপনার উপকারে আসে তাহলে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন
না। ঈদ মোবারক-আল্লাহ আমাদের সবাইকে ঈদের প্রকৃত শিক্ষা বুঝে পালন করার তৌফিক দান
করুন। আল্লাহ হাফেজ
অল অভার বিডি ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।;
comment url