চুলকানি দূর করা ওষুধের নাম - চুলকানির জন্য সবচাইতে ভালো ঔষধ কোনটি
চুলকানির একটি বিরক্তি কর সমস্যা যা ত্বকের অস্বস্তি এবং ঘন ঘন চুলকানোর মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করে। অনেকেই জানেন না, চুলকানির কারণ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যায়। এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছি চুলকানি দূর করার সবচেয়ে কার্যকর কিছু ঔষধের নাম, যেগুলো ডাক্তারের পরামর্শে ব্যবহার করলে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যায়। যেমনঃ ডার্মোভেট, কাটিভেট, অলট্রাকোট, ফেনার গান ক্রিম ইত্যাদি।
এছাড়াও এলার্জি বা ফাংগাল সংক্রামন জনিত চুলকানির জন্য আলাদা ওষুধের দরকার হতে পারে। তাই কোন চুলকানিতে কোন ঔষধ ভালো কাজ করে, তা জানা জরুরি। এই আর্টিকেলে আপনি পাবেন কার্যকর ঔষধের তালিকা, ব্যবহার বিধি এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ। যারা চুলকানির জন্য সঠিক ঔষধ খুঁজছেন, তাদের জন্য এই লেখাটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।পেজ সুচিপত্রঃ চুলকানি দূর করা ওষুধের নাম - চুলকানির জন্য সবচাইতে ভালো ঔষধ কোনটি
- শরীর চুলকানির সবচাইতে ভালো ঔষধ কোনটি
- চুলকানির জন্য কোন ক্রিম ব্যবহার করা যায়
- চুলকানি প্রতিরোধে ঘরোয়া উপায়
- চুলকানির জন্য কোন মলম ব্যবহার করা যায়
- FAQ - চুলকানি দূর করা ওষুধের নাম
- চুলকানির এন্টিবায়োটিক ঔষধের নাম
- পুরুষাঙ্গের চুলকানি দূর করার ঔষধের নাম
- FAQ - চুলকানির জন্য সবচাইতে ভালো ঔষধ কোনটি
- এলার্জি চুলকানি দূর করার উপায়
- উপসংহারঃ চুলকানি দূর করা ওষুধের নাম - চুলকানির জন্য সবচাইতে ভালো ঔষধ কোনটি
শরীর চুলকানির সবচাইতে ভালো ঔষধ কোনটি
শরীর চুলকানি একটি সাধারণ কিন্তু অস্বস্তিকর সমস্যা, যা
এলার্জি, ড্রাই স্কিন, ফাংগাল সংক্রমণ বা নানা ধরনের ত্বকের রোগের
কারণে হতে পারে। চুলকানির প্রকৃতি ও কারণ বুঝে সঠিক নির্বাচন করায় এর দ্রুত
সমাধানের চাবিকাঠি। অনেক সময় মানুষ নিজের মতো করে যে কোন ক্রিম ব্যবহার
করে, যা ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ায় সবচেয়ে
নিরাপদ।
চুলকানির জন্য প্রাথমিকভাবে ব্যবহৃত কিছু কার্যকর ওষুধ হলঃ
- ১ ডার্মোভেট ক্রিমঃ এটি একটি স্টেরয়েড জাতীয় ক্রিম, যা চুলকানি ও প্রদাহ কমাতে দ্রুত কাজ করে।
- ২ ফেনারগান ক্রিমঃ এটি এলার্জি ও পোকামাকড়ের কামড়ের চুলকানিতে ভালো কাজে দেয়।
- ৩ অলট্রাকোর্টঃ এটি ফাংগাল সংক্রমণ এবং চুলকানির জন্য বহুল ব্যবহৃত ঔষধ।
- ৪ হাইড্রোকরটিসন ক্রিমঃ হালকা থেকে মাঝারি মাত্রা চুলকানিতে নিরাপদ ও কার্যকর।
যদি চুলকানির পেছনে ছত্রাক থাকে, তবে অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম যেমন
ক্লোট্রিমাজল, কেনাকোনাজল বা মাইকোনাজল ব্যাবহারে ভালো ফল পাওয়া
যায়। চুলকানির পাশাপাশি যদি র্যাশ, ফোষ্কা বা লালচে ভাব দেখা যায় তবে তা
সিরিয়াস কোন ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে ঔষধের পাশাপাশি ডাক্তারের
পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সবশেষে, মনে রাখতে হবে প্রতিটি চুলকানির ধরন আলাদা হতে পারে, । তাই ঔষধ
ব্যবহারের আগে কারনটি জানা সবচেয়ে জরুরী সঠিক ঔষধ এবং যত্নই নিতে পারে এই
অস্বস্তিকর সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়।
চুলকানির জন্য কোন ক্রিম ব্যবহার করা যায়
চুলকানি একটি সাধারণ ত্বকের সমস্যা, যা বিভিন্ন কারণে যেমন শুষ্ক
ত্বক, এলার্জি, ত্বকের সংক্রমণ বা অন্যান্য চর্ম রোগের কারণে হতে
পারে। এটি অস্বস্তিকর এবং কখনো কখনো তীব্র হয়ে ত্বকের ক্ষতি করতে
পারে। চুলকানি নিরাময়ে ক্রিম ব্যবহার একটি কার্যকর সমাধান হতে
পারে, তবে সঠিক ক্রিম নির্বাচনের জন্য সমস্যার কারণ জানা জরুরী। এই
আর্টিকেলে আমরা চুলকানির জন্য কার্যকর ক্রিম এবং সেগুলোর ব্যবহার সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করবো।
চুলকানির চিকিৎসার আগে এর কারণ জানা গুরুত্বপূর্ণ। শুষ্ক
ত্বক, একজিমা, সোরিয়াসিস, ফাংগাল সংক্রমণ, এলার্জি বা পোকামাকড়ের
কামড়ের কারণে চুলকানি হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, ডায়াবেটিক ও লিভার এর
সমস্যার মত অভ্যন্তরীণ রোগেও চুলকানির কারণ হতে পারে। তাই যদি
চুলকানি দীর্ঘস্থায়ী বা তীব্র হয়, তবে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
নেওয়া উচিত। এর জন্য ত্বকের অবস্থা এবং সমস্যার ধরন জানাই জরুরী।
চুলকানির জন্য জনপ্রিয় ক্রিম
বাজারে বিভিন্ন ধরনের ক্রিম পাওয়া যায়, যা চুলকানির কমাতে সাহায্য করে।
নিচে কিছু জনপ্রিয় ক্রিমের নাম ও তাদের ব্যবহার উল্লেখ করা হলোঃ
- হাইড্রোকর্টিসোন ক্রিমঃ এটি একটি হালকা টেরয়েড ক্রিম, যা এলার্জি, একজিমা বা পোকামাকড়ের কামড়ের কারণে হওয়া চুলকানি কমাতে ব্যবহৃত হয়। এটি ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং দ্রুত আরাম দেয়। তবে, এটি দীর্ঘদিন ব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।
- ক্লোট্রিমাজল ক্রিমঃ ফাঙ্গাল সংক্রমণের কারণে চুলকানি হলে এই এন্টিফাঙ্গাল ক্রিম গুলো কার্যকর। এগুলো রিংওয়ার্ম বা দাদ এর মত সমস্যা চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
- ক্যালামাইন লোশনঃ এটি একটি হালকা প্রশান্তিদায়ক ক্রিম বা লোশান, যা পোকামাকড়ের কামড়, সানবার্ণ বা হালকা এলার্জির কারণে। চুলকানি কমাতে ব্যবহৃত হয়, এটি ত্বকে ঠান্ডা করে আরাম প্রদান করে।
- ময়েশ্চারাইজিং ক্রিমঃ শুষ্ক ত্বকের কারণে চুলকানি হলে এই ময়শ্চেরাইজিং ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো ত্বককে হাইড্রেট রাখে এবং চুলকানি কমায়।
ক্রিম ব্যবহারের সঠিক নিয়ম
ক্রিম ব্যবহারের আগে ত্বক পরিষ্কার করা উচিত। অল্প পরিমাণে ক্রিম আক্রান্ত
স্থানে লাগিয়ে হালকাভাবে মেসেজ করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া
স্টেরওয়েড ক্রিম দীর্ঘদিন ব্যবহার করা উচিত নয়। এছাড়া, ক্রিম লাগানোর পর
হাত ধুয়ে ফেলতে হবে যাতে অন্যস্থানে ছড়িয়ে না পড়ে। যদি ক্রিম ব্যবহারের
পর তাকে জ্বালাপোড়া বা এলার্জির লক্ষণ দেখা যায়, তবে ব্যবহার বন্ধ করে
ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
যদি চুলকানি কয়েকদিনের মধ্যে না কমে, ত্বকে লাল ভাব, ফোলা ভাব বা পুজ দেখা
যায়, তবে অবশ্যই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া উচিত। দীর্ঘস্থায়ী
চুলকানি অনুগ্রহ রোগের লক্ষণ হতে পারে।তাই, ক্রিম ব্যবহারের আগে ডাক্তারের
পরামর্শ নেওয়া নিরাপদ।
চুলকানি প্রতিরোধে ঘরোয়া উপায়
চুলকানি একটি সাধারন সমস্যা হলেও এটি অস্বস্তিকর ও বিরক্তিকর হতে
পারে। বিশেষ করে যদি তা দীর্ঘদিন ধরে চলে বা বারবার ফিরে আসে। অনেক
সময় চুলকানির পেছনে থাকে শুষ্ক ত্বক, এলার্জি, ঘাম জমে থাকা, হিট
র্যাশ বা কোন সংক্রমণ। তবে ভালো খবর হলো, ঘরোয়া উপায়ে এই সমস্যার
প্রতিকার করা যায় এবং প্রতিরোধ করাও সম্ভব।
- প্রথমেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যান্ত জরুরী। প্রতিদিন গোসল করুন এবং গরমে ঘেমে গেলে বারবার কাপড় পরিবর্তন করুন। কারণ ঘেমে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয় যা চুলকানির কারণ হতে পারে। ত্বক ভালোভাবে শুকিয়ে নিন যাতে আদ্রতা না জন্ম।
- দ্বিতীয়ত, নারিকেলের তেল একটি প্রাকৃতিক জীবাণু নাশক ও মশ্চারাইজার। এটি শুষ্কতা দূর করে ও ত্বকে একটা সুরক্ষা আবরণ তৈরি করে। প্রতিদিন গোসলের পর অথবা রাতে ঘুমানোর আগে আক্রান্ত জায়গায় নারিকেলের তেল লাগানো যেতে পারে।
- তৃতীয়ত, নিম পাতা চুলকানির জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি উপাদান। নিম পাতার অ্যান্টিসেপটিক ও এন্টিফাঙ্গাল গুনাগুন ত্বকের জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে। কয়েকটি নিম পাতা ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করা বা আক্রান্ত স্থানে। ঠান্ডা করে লাগানো যেতে পারে।
- চতুর্থত, ঠান্ডা পানি বা বরফের শেখ অনেক সময় তাৎক্ষণিক আরাম দেয়। চুলকানির জায়গায় এটি পরিষ্কার কাপড়ে বরফ মুড়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট শেক দিলে চুলকানি কমে আসে। এটি এলার্জি র্যাশ জনিত চুলকানির জন্য বিশেষভাবে কার্যকর।
- পঞ্চমত, বেসন ও দইয়ের মিশ্রণ ত্বক ঠান্ডা রাখে ও ময়লা পরিষ্কার করে। এক চামচ বেসনের সঙ্গে দুই চামচ টক দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন, তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- ষষ্ঠত, কাঁচা হলুদ বা হলুদের গুঁড়া জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে। সামান্য হলুদের গুড়ার সঙ্গে পানি মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে চুলকানির জায়গায় ব্যবহার করলে তা দ্রুত আরাম দেয়।
- সপ্তমত, মিল বাথ একটি জনপ্রিয় ঘরোয়া পদ্ধতি। এক কাপ ওডমিল গুঁড়া করে হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে গোসল করলে তা ত্বকে শীতলতা দেয় এবং চুলকানি কমায়। এটি শিশুদের ত্বকের জন্য নিরাপদ।
- অষ্টমত, এলোভেরা জেল ত্বক ঠান্ডা রাখে এবং চুলকানির জায়গায় আরাম দেয়। প্রাকৃতিক অ্যালোভেরা পাতার ভেতরের জেল সংগ্রহ করে সরাসরি ত্বকে লাগানো যেতে পারে। এটি প্রতিদিন দুইবার ব্যবহার করা ভালো।
চুলকানির ঘরোয়া প্রতিরোধ গুলো সাধারণত নিরাপদ হলেও, যদি দীর্ঘদিন ধরে
সমস্যার স্থায়ী হয় বা ঘা হয়ে যায়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
জরুরী। সব সময় স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস
গড়ে তুললে চুলকানির মতো সমস্যার সহজেই প্রতিরোধ করা যায়।
চুলকানির জন্য কোন মলম ব্যবহার করা যায়
চুলকানি একটি সাধারণত ত্বকের সমস্যা যা নানা কারণে হতে
পারে, যেমনঃ শুষ্ক ত্বক, ফাংগাল ইনফেকশন, এলার্জি, ঘাম
জমে থাকা, একজিমা বা স্ক্যাবিস। এই সমস্যায় অনেক সময় ঘরোয়া উপায়
কাজ করলেও, বিশেষক্ষেত্রে চুলকানির জন্য উপযুক্ত মলম ব্যবহার করাই অধিক
কার্যকর ও দ্রুত উপশমের পথ। তবে মলম ব্যবহারের আগে সমস্যার কোন কারণে হচ্ছে
তা বোঝা জরুরী, কারণ ভুল ওষুধ প্রয়োগে সমস্যা আরো বাড়তে পারে।
চুলকানির জন্য সাধারণত এন্টিফাঙ্গাল, এন্টিহিস্টামিন বা কার্টিকোস্টরয়েড
জাতীয় মলম ব্যবহৃত হয়। ফাংগাল সংক্রামনজনিত চুলকানির জন্য ক্লোটিমাজল
(Clotrimazole), মাইকোনাজল (Miconazole), বা কেটোকানাজল । মলম ব্যবহার করা যেতে
পারে। এগুলো ফাঙ্গাস কে ধ্বংস করে এবং সংক্রমণজনিত চুলকানি কমায়।
এ ছাড়া এলার্জি বা একজিমা ধরনের চুলকানির জন্য হাইড্রোকার্টেশন মলম বেশ
কার্যকর। এটি একটি হালকা স্টেরয়েড যা চুলকানি, লালচে ভাব ও ফোলা ভাব
কমাতে সাহায্য করে। তবে দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে
পারে, তাই ডাক্তারের পরামর্শে ব্যবহার করাই নিরাপদ।
চুলকানি যদি খুব তীব্র হয় এবং ঘা দেখা দেয়, তাহলে ফুসিডিক এসিড বা
মিউপিরোসিন নামক এন্টিবায়োটিক মলম ব্যবহার হতে পারে। এগুলো জীবাণু নাশক
হিসেবে কাজ করে এবং সংক্রমণজনিত সমস্যা দ্রুত নিরাময় করে।
স্ক্যাবিস বা গালে হলে ব্যাবহৃত হয় পারমেথ্রিন ৫% মলম, যা রাতে পুরো শরীরে
লাগিয়ে সকালে ধুয়ে ফেলতে হয়। এটি একবারেই স্কাবিসের জীবাণু ধ্বংস
করতে সক্ষম হয়। তবে পরিবারের সকল সদস্যর চিকিৎসা একসাথে করা
জরুরি।
বাজারে পাওয়া কিছু কম্বিনেশন মলম যেমনঃ Candid B, Betnovet-N, Fungidal ইত্যাদি
অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন। তবে এসব মলমে স্টেরয়েড ও এন্টিফাঙ্গাল উপাদান
একসাথে থাকায় ভুল প্রয়োগে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে, যেমন ত্বক পাতলা
হয়ে যাওয়ার বা দাগ পড়া। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এসব ক্রিম দীর্ঘদিন
ব্যবহার না করাই ভালো।
সবশেষে বলা যায়, চুলকানির জন্য সঠিক মলম নির্বাচন করতে হলে ত্বকের সমস্যার
ধর্ম বুঝে নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করলে তা নিরাপদ ও
কার্যকর হয়। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের
শরণাপন্ন হওয়া উচিত। নিজের ত্বক সম্পর্কে সচেতন থাকলে অনেক বড় সমস্যা খুব
সহজেই এড়িয়ে চলা যায়।
FAQ - চুলকানি দূর করা ওষুধের নাম
প্রশ্ন ১ঃ চুলকানি দূর করার সবচেয়ে প্রচলিত ঔষধ কোনটি?
উত্তরঃ চুলকানির কারণ অনুযায়ী ঔষধ ভিন্ন হয়। তবে সাধারণত ফাংগাল
সংক্রমন জনিত চুলকানির জন্য Clotrimazole, Miconazole নামের এন্টিফাঙ্গাল
ক্রিম বা মলম সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন ২ঃ এলার্জি বা একজিমার জন্য কি ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা
হয়?
এলার্জিজনিত চুলকানির জন্য সাধারণত Hydrocortisone মলম ব্যবহার করা
হয়। এটি হালকা স্টেরয়েড জাতীয় মলম যা ত্বকের প্রদাহ ও চুলকানি কমাতে
সাহায্য করে।
প্রশ্ন ৩ঃ খোসপাচড়া বা স্ক্যাবিস হলে কোন ঔষধ সবচাইতে ভালো কাজ
করে?
স্ক্যাবিসের ক্ষেত্রে Permethrin 5% Cream সবচেয়ে কার্যকর। এটি পুরো
শরীরে লাগিয়ে সকালবেলা ধুয়ে ফেলতে হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিকভাবে
ব্যবহার করলে একবারেই সুফল পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ৪ঃ জীবাণু সংক্রামন জনিত চুলকানিতে কোন মলম ব্যবহার করা
উচিত?
বিস্তার লাভ করা জীবাণু সংক্রমণের ক্ষেত্রে
Fusidic Acid, Mupirocin নামের অ্যান্টিবায়োটিক মলম ব্যবহার করা
হয়। তবে এগুলো শুধুমাত্র জীবাণুজনিত সংক্রমণের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
চুলকানির এন্টিবায়োটিক ঔষধের নাম
চুলকানি অনেক সময় ব্যাকটেরিয়া জাতীয় সংক্রামণের কারণে হয়ে
থাকে, যেগুলোকে ব্যাকটেরিয়াল স্কিন ইনফেকশন বলা হয়। এ ধরনের
ইনফেকশন থেকে চুলকানি উপশমে এন্টিবায়োটিক ঔষধ ব্যবহার করা হয়। সাধারণত
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহৃত কিছু পরিচিত অ্যান্টিবায়োটিক হলো-
Cephalexin, Flucloxacillin, Clindamycin, Erythromycine এই ওষুধ
মূলত শরীরের ভেতর থেকে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করে কানি ও প্রদাহ কামাতে সাহায্য
করে।
অন্যদিকে চুলকানির প্রকৃতি যদি বাহ্যিক ও ত্বকে সীমাবদ্ধ হয়, তবে
অ্যান্টিবায়োটিক মলম বা ক্রিম যেমন-
Mupirocin, Fusidic acid, Neomycine Sulfate ব্যবহার করা
হয়। এগুলো ক্ষতস্থানে ব্যাকটেরিয়া রোধ করে দ্রুত আরাম
দেয়। তবে মনে রাখা জরুরি, চুলকানির কারণ যদি ফাংগাল এলার্জিক
হয়, তাহলে এন্টিবায়োটিক কার্যকর নয়। তাই অপ্রয়োজনীয় ভাবে এসব ঔষধ
সেবন বিপদজনক হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন প্রকার এন্টিবায়োটিক
ব্যবহার না করায় ভালো।
পুরুষাঙ্গের চুলকানি দূর করার ঔষধের নাম
পুরুষাঙ্গির চুলকানি একটি সাধারণ এবং অস্বস্তিকর সমস্যা, যা বিভিন্ন কারণে
হতে পারে, যেমন ছত্রাক সংক্রমণ, ব্যাকটেরিয়ার, এলার্জি বা
অপরিচ্ছন্নতা। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মেনে চলা জরুরী। বাজারে
এবং চিকিৎসকের পরবর্তী অনুযায়ী কিছু কার্যকর ওষুধ ও ক্রিম পাওয়া যায়, যা
এই সমস্যার সমাধানে সাহায্য করে। তবে, যে কোনো ঔষধ ব্যবহারের পূর্বে
চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে পুরুষাঙ্গের চুলকানি
দূর করার জন্য কিছু ও প্রেমের নাম এবং তাদের ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা
হলো।
- ফ্লুকোনাজলঃ ফ্লুকোনাজল হল একটি অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ। যা ছত্রাক সংক্রমণের কারণে সৃষ্ট চুলকানি দূর করতে ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত মুখে খাওয়ার ক্যাপসুল আকারে পাওয়া যায়। দিনে একটি ক্যাপসুল, সাধারণত ভরা পেটে খেতে হয়। ৭ থেকে ১৪ দিন খাওয়া যায়। এই ঔষধ সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপযুক্ত। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে গ্রহণ করুন।
- আর্টিকা ২৫ঃ আরটিকা ২৫ একটি এন্টিফাঙ্গাল ট্যাবলেট, যা পুরুষাঙ্গের ছত্রাক জনিত সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি ত্বকের চুলকানি, দাদ এবং অন্যান্য ফাংগাল সংক্রমনের বিরুদ্ধে কার্যকর। দিনে একটি ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এর দাম সাধারণত 80 থেকে 90 টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। এটি ব্যবহারের আগে আক্রান্ত স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। চিকিৎসকের পরামর্শে এটি শরীরের অন্যান্য স্থানেও ব্যবহার করা যায়।
- ফ্লুগাল ৫০ এমজিঃ ফ্লুগাল ৫০ এমজি একটি অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ, যা ছত্রাক নাশক সংক্রমণের কারণে ব্যবহৃত হয়। এটি মুখে খাওয়া ট্যাবলেট হিসেবে পাওয়া যায়। সাধারণত দিনে একটি ট্যাবলেট হিসেবে খাওয়া যায়। এটি তাকে লাল ভাব। এবং জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে ১০ থেকে ১৪ দিনের কোর্স সাধারণত কার্যকর। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এড়াতে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন। এটি শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপযুক্ত।
- কার্টিসোন ক্রিমঃ কার্টিসোন ক্রিম এলার্জি বা ত্বকের প্রধান জনিত চুলকানির জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি ত্বকের অ্যালার্জি য়া প্রতিক্রিয়া কমিয়ে চুলকানি দূর করে। তবে, পুরুষাঙ্গের সংবেদনশীল তাকে এটি ব্যবহারে সর্তকতা প্রয়োজন। অল্প পরিমাণে দিনে এক থেকে দুইবার লাগানো যেতে পারে। এটি অন্তর্নিহিত সংক্রমণের চিকিৎসা করে না, তাই চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি। ত্বককে খোলা রেখে ব্যবহার করুন।
পুরুষাঙ্গের চুলকানি একটি সংবেদনশীল সমস্যা, যা সঠিক চিকিৎসা ও যত্নের
মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। উপরে উল্লেখিত ঔষধ গুলো চিকিৎসকের পরামর্শ
ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়। ঘরোয়া প্রতিকার এবং স্বাস্থ্যবিধে মেনে চলা
এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা এবং সঠিক চিকিৎসার
মাধ্যমে এই অস্বস্তি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
FAQ - চুলকানির জন্য সবচাইতে ভালো ঔষধ কোনটি
প্রশ্ন ১ঃ চুলকানির জন্য খাওয়ার ওষুধ কি রয়েছে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, এলার্জি বা সারা শরীর চুলকানির ক্ষেত্রে খাওয়ার
এন্টিহিস্টামিন ঔষধ যেমন- Cetirizine,
Loratadine, Fexofenadine সেবন করা হয়। এগুলো চুলকানির অনুভূতি
কমিয়ে দেয়।
প্রশ্ন ২ঃ বাজারে কি কোন কম্বিনেশন ক্রিম পাওয়া যায় সুপারির জন্য?
উত্তরঃ হ্যাঁ, Candid B, Betnovate-N, Quadriderm ইত্যাদি মলমে
এন্টিফাঙ্গাল, এন্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড এই তিনটি উপাদান থাকে। তবে এসব
ক্রিম ডাক্তারি পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘদিন ব্যবহার করা ঠিক নয়, এতে ত্বকের
ক্ষতি হতে পারে।
এলার্জি চুলকানি দূর করার উপায়
এলার্জিজনিত চুলকানি আমাদের জীবনে একটি অস্বস্তিকর এবং বিরক্তিকর
সমস্যা। এটি ত্বকে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে, যেমন লালচে
ভাব, ফুসকুড়ি, জ্বালাপোড়া কিংবা চুলকানি। এই ধরনের সমস্যা তীব্র
হলে দৈনন্দিন জীবনে এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। তাই প্রয়োজনে সময় মতো সঠিক
চিকিৎসা ও প্রতিকার দরকার। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আলোচনা করব এলার্জির
থেকে হওয়া চুলকানির প্রতিরোধ ও দূর করার কিছু কার্যকর উপায় যা ঘরে বসে সহজেই
মেনে চলা সম্ভব।
এলার্জি চুলকানি দূর করার কার্যকর উপায় সমূহঃ
- ঠান্ডা পানি বা বরফ ব্যবহারঃ চুলকানির জায়গায় ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেললে আরাম পাওয়া যায়। প্রয়োজনে একটি পরিষ্কার কাপড়ের বড় জড়িয়ে হালকা চেপে ধরতে পারেন।
- এন্টিহিস্টামিন ঔষধ সেবনঃ সিটিরিজিন, লোরাটাডিন, ফেক্সোফেনাডিন ইত্যাদি এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ এনার্জি দূর করতে সাহায্য করে।
- এলার্জির কারণ চিহ্নিত করে এড়িয়ে চলাঃ ধুলোবালি, পশুর লোম, খাবার কিংবা প্রসাধনী যা থেকে চুলকানি হচ্ছে তা সনাক্ত করে দূরে থাকুন।
- সবসময় পরিষ্কার ও আদ্র রাখাঃ ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে প্রজনিত সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন এবং পরিষ্কার পানিতে গোসল করুন।
- সুতির ঢিলা জামা কাপড় পরাঃ সিনথেটিক কাপড় বা আটোসাটো জামা কাপড় ত্বকে ঘর্ষণ সৃষ্টি করে চুলকানি বাড়াতে পারে। তাই ঢিলা সুতীর কাপড় বা পোশাক ব্যবহার করুন।
উপসংহারঃ চুলকানি দূর করা ওষুধের নাম - চুলকানির জন্য সবচাইতে ভালো ঔষধ কোনটি
চুলকানির জন্য সবচেয়ে ভালো ঔষধ নির্ভর করে এর কারণের ওপর। তাই যেকোন ঔষধ
ব্যবহারের আগে সমস্যার ধারন বুঝে নেওয়া জরুরি। হালকা সমস্যায় ঘরোয়া লোশন
বা সাধারণ এন্টিহিস্টামিন যথেষ্ট হলেও, বারবার বা তীব্র চুলকানির ক্ষেত্রে
অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক ঔষধ ব্যবহারে চুলকানি দূর
করা কাজটা সহজ ও কার্যকর হয়ে উঠতে পারে।
আশা করি, আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। যদি আজকের
এই আর্টিকেলটি আপনাদের পছন্দ হয়ে থাকে তাহলে বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতদের মধ্যে
শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেল সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা কিছু জানার
থাকলে মন্তব্য করুন অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন, ধন্যবাদ।
অল অভার বিডি ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।;
comment url